টাঙ্গাইলের মধুপুরের বিএডিসি’র গুদাম থেকে চার কোটি টাকার সার গায়েবের অভিযোগ, দুশ্চিন্তায় স্টোর কিপারের মৃত্যু
আপডেট : সোমবার, ৬ মে, ২০১৯
প্রিয় মধুপুর খবর :
সংগ্রহ: মোঃনাজমুল ইসলাম
কিশোরগঞ্জের ভৈরব সার গুদামের পর এবার টাঙ্গাইলের মধুপুরের বিএডিসি’র সার গুদামের চার কোটি টাকার সার নিয়ে কেলেংকারির অভিযোগ উঠেছে। পরিমাণ এর থেকে বেশিও হতে পারে ধারণা অনেকের।
এ অভিযোগের শুরুতে গুদাম রক্ষক মোজাম্মেল হকের আকষ্মিক হার্ট এ্যাটাকে মৃত্যু নিয়েও আছে নানা আলোচনা। গুদাম রক্ষকের মৃত্যুর পর প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে গুদাম সিলগালা করে দেয়া হয়েছে। সার ডিলারগণের অনেকে এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন। টাঙ্গাইলের সংশ্লিষ্ট বিভাগের যুগ্ম-পরিচালক কিশোরগঞ্জের দায়িত্ব পালন কালে ২০১৪ সালে ঘটেছিল এমন ঘটনা। এখনও সে ঘটনায় মামলার বাদী হিসেবে ওই যুগ্ম-পরিচালককে আদালতে দাঁড়াতে হয়।
মধুপুরের কাকরাইদস্থ বিএডিসি’র সার গুদামে বছর দুই আগে যোগদানের পর থেকেই গুদাম রক্ষক মোজাম্মেল হক কতিপয় কর্মকর্তা ও ডিলারদের সুবিধা দিয়ে সার গুদামে না এনে বেআইনীভাবে রাস্তা থেকে বাকিতে বিক্রি করে দিয়েছেন। প্রায় দেড় বছর ধরে চলে আসা এমন অবৈধ চর্চায় সংশ্লিষ্টরা প্রচুর অর্থ রোজগার করে আসছেন। গুদামে প্রবেশ না করিয়ে চট্টগ্রামের আমদানীকারক প্রতিষ্ঠান থেকে নন ইউরিয়া সারের চালান ডিলারদের গুদামে ঢুকে দিনের পর দিন মজুদ থেকে ওই সার বিক্রির পর টাকা সুবিধাজনক সময়ে গুদামের ক্যাশে আসে। এতে করে গুদামে সারের মজুদে বড় রকমের হেরফের ও টাকার হিসেবে বড় অংকের গড়মিল সৃষ্টি হয়। কানা ঘোষায় বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আসে।
শোনা যায়, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের চাপে স্টোর কিপার মোজাম্মেল হক অনেক চিন্তিত হয়ে পড়েন। সুবিধাভোগী ডিলারদের কাছ থেকে বাকি টাকা পাওয়ার চাপ দিয়েও তেমন ফায়দা না পেয়ে মুষঢ়ে যান তিনি। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। অবশেষে গত ১৮ মার্চ অফিস করে বাড়ি ফিরে গভীর রাতে হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। তার মৃত্যুতে গুদামে মজুদ সারের পরিমাণ নিয়ে গুঞ্জন আরো বেড়ে যায়। শোনা যায়, ৩০ থেকে ৪০ হাজার বস্তা সার গুদামে নেই, গায়েব হয়ে গেছে। এসব সার অবৈধ পথে ডিলারদের কাছে হস্তান্তর হয়েছে এবং এর অধিকাংশের মূল্য বকেয়া রয়েছে।
এদিকে মোজাম্মেল হকের মৃত্যুতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট ও মধুপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহবুবুল হককে দিয়ে ৫০০০ মে. টন ধারণ ক্ষমতার সারের গুদাম সিল গালা করে দিয়েছে। এখন ডিলারদের কাছ থেকে টাকা তোলার চেষ্টা চলছে। সব দোষ মৃত মোজাম্মেলের উপর চাপানোর চেষ্টা চলছে।
তবে গুদাম খুলে হিসাব শুরুর পরই আসল রহস্য ফাঁস হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এ নিয়ে যুগ্ম-পরিচালক মো. শহিদুল্লাহ শেখ বলেন, কিছু গুঞ্জন শুনেছি, ডিসি স্যারের সাথে কথা বলে গুদাম সিলগালা করে দিয়েছি। এছাড়াও একজন প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে গুদামের সারের হিসাব মেলানো হবে। সেক্ষেত্রে বিদেশ থেকে আনা সারের এন্ট্রি স্লীপ, বিক্রয় রেজিস্টার এবং স্টক রেজিস্টারের সাথে গুদামের মজুদ মেলানো হবে।
এবিষয়ে প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট ও মধুপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহবুবুল হক বলেন, গুদাম সীলগালা করে দেয়া হয়েছে। ডিসি স্যারের সাথে কথা বলেছি। স্যারের অনুমতি পেলেই আমি নিজে উপস্থিত থেকে সারের মজুদ মেলাবো। তারপর আসল চিত্র বোঝা যাব।
আপডেট : সোমবার, ৬ মে, ২০১৯
প্রিয় মধুপুর খবর :
সংগ্রহ: মোঃনাজমুল ইসলাম
![]() |
কিশোরগঞ্জের ভৈরব সার গুদামের পর এবার টাঙ্গাইলের মধুপুরের বিএডিসি’র সার গুদামের চার কোটি টাকার সার নিয়ে কেলেংকারির অভিযোগ উঠেছে। পরিমাণ এর থেকে বেশিও হতে পারে ধারণা অনেকের।
এ অভিযোগের শুরুতে গুদাম রক্ষক মোজাম্মেল হকের আকষ্মিক হার্ট এ্যাটাকে মৃত্যু নিয়েও আছে নানা আলোচনা। গুদাম রক্ষকের মৃত্যুর পর প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে গুদাম সিলগালা করে দেয়া হয়েছে। সার ডিলারগণের অনেকে এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন। টাঙ্গাইলের সংশ্লিষ্ট বিভাগের যুগ্ম-পরিচালক কিশোরগঞ্জের দায়িত্ব পালন কালে ২০১৪ সালে ঘটেছিল এমন ঘটনা। এখনও সে ঘটনায় মামলার বাদী হিসেবে ওই যুগ্ম-পরিচালককে আদালতে দাঁড়াতে হয়।
মধুপুরের কাকরাইদস্থ বিএডিসি’র সার গুদামে বছর দুই আগে যোগদানের পর থেকেই গুদাম রক্ষক মোজাম্মেল হক কতিপয় কর্মকর্তা ও ডিলারদের সুবিধা দিয়ে সার গুদামে না এনে বেআইনীভাবে রাস্তা থেকে বাকিতে বিক্রি করে দিয়েছেন। প্রায় দেড় বছর ধরে চলে আসা এমন অবৈধ চর্চায় সংশ্লিষ্টরা প্রচুর অর্থ রোজগার করে আসছেন। গুদামে প্রবেশ না করিয়ে চট্টগ্রামের আমদানীকারক প্রতিষ্ঠান থেকে নন ইউরিয়া সারের চালান ডিলারদের গুদামে ঢুকে দিনের পর দিন মজুদ থেকে ওই সার বিক্রির পর টাকা সুবিধাজনক সময়ে গুদামের ক্যাশে আসে। এতে করে গুদামে সারের মজুদে বড় রকমের হেরফের ও টাকার হিসেবে বড় অংকের গড়মিল সৃষ্টি হয়। কানা ঘোষায় বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আসে।
শোনা যায়, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের চাপে স্টোর কিপার মোজাম্মেল হক অনেক চিন্তিত হয়ে পড়েন। সুবিধাভোগী ডিলারদের কাছ থেকে বাকি টাকা পাওয়ার চাপ দিয়েও তেমন ফায়দা না পেয়ে মুষঢ়ে যান তিনি। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। অবশেষে গত ১৮ মার্চ অফিস করে বাড়ি ফিরে গভীর রাতে হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। তার মৃত্যুতে গুদামে মজুদ সারের পরিমাণ নিয়ে গুঞ্জন আরো বেড়ে যায়। শোনা যায়, ৩০ থেকে ৪০ হাজার বস্তা সার গুদামে নেই, গায়েব হয়ে গেছে। এসব সার অবৈধ পথে ডিলারদের কাছে হস্তান্তর হয়েছে এবং এর অধিকাংশের মূল্য বকেয়া রয়েছে।
এদিকে মোজাম্মেল হকের মৃত্যুতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট ও মধুপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহবুবুল হককে দিয়ে ৫০০০ মে. টন ধারণ ক্ষমতার সারের গুদাম সিল গালা করে দিয়েছে। এখন ডিলারদের কাছ থেকে টাকা তোলার চেষ্টা চলছে। সব দোষ মৃত মোজাম্মেলের উপর চাপানোর চেষ্টা চলছে।
তবে গুদাম খুলে হিসাব শুরুর পরই আসল রহস্য ফাঁস হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এ নিয়ে যুগ্ম-পরিচালক মো. শহিদুল্লাহ শেখ বলেন, কিছু গুঞ্জন শুনেছি, ডিসি স্যারের সাথে কথা বলে গুদাম সিলগালা করে দিয়েছি। এছাড়াও একজন প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে গুদামের সারের হিসাব মেলানো হবে। সেক্ষেত্রে বিদেশ থেকে আনা সারের এন্ট্রি স্লীপ, বিক্রয় রেজিস্টার এবং স্টক রেজিস্টারের সাথে গুদামের মজুদ মেলানো হবে।
এবিষয়ে প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট ও মধুপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহবুবুল হক বলেন, গুদাম সীলগালা করে দেয়া হয়েছে। ডিসি স্যারের সাথে কথা বলেছি। স্যারের অনুমতি পেলেই আমি নিজে উপস্থিত থেকে সারের মজুদ মেলাবো। তারপর আসল চিত্র বোঝা যাব।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন